ঠাকুরগাঁওয়ে একই সঙ্গে দুই কলেজে চাকুরী তিন প্রভাষকের
সরকারী সকল সুযোগ গ্রহন করে একই সাথে দুইটি কলেজে চাকুরী করে যাচ্ছেন তিন জন মানুষ গড়ার কারিগর! তড়িঘড়ি করে দুই কলেজে চাকুরী করায় প্রকৃত শিক্ষা লাভ হতে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। এরই সাথে অভিযোগ উঠে এসেছে রুহিয়া ডিগ্রী কলেজ এর পাশাপাশি আরো অন্যান্য কলেজে চাকুরী করেন নুর ইসলাম মনা, আফরোজা বেগম ও আজিজুন নাহার নামে এই তিনজন শিক্ষক।
তথ্যানু সন্ধানে জানা যায়, রুহিয়া ডিগ্রী কলেজে অনার্স দর্শন বিভাগের প্রভাষক হিসেবে কর্মরত আছেন নুর ইসলাম মনা। একই সাথে তিনি আবুল হোসেন সরকার ডিগ্রী কলেজে রয়েছেন ডিগ্রী (পাস) দর্শনের প্রভাষক হিসেবে। দুইটি কলেজেই হাজিরা খাতায় তার নিয়মিত স্বাক্ষর রয়েছে।
রুহিয়া ডিগ্রী কলেজে অনার্স ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক হিসেবে কর্মরত আছেন আফরোজা বেগম। একই সাথে তিনি এনটিআরসিএ কর্তৃক সরকারি ভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে লাহিড়ী ডিগ্রী কলেজে ব্যবস্থাপনা বিভাগে ডিগ্রি (পাস) কোর্সে প্রভাষক হিসেবে আছেন। দুই প্রতিষ্ঠানেই তার ও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর রয়েছে।
রুহিয়া ডিগ্রী কলেজে অনার্স ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক হিসেবে আছেন আজিজুন নাহার। বোদা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজেও তার নিয়োগ রয়েছে। তিনিও দুই প্রতিষ্ঠানেই তার হাজিরা খাতায় নিয়মিত স্বাক্ষর করছেন। অথাৎ ২ টি কলেজে সমান তালে চালিয়ে যাচ্ছেন অধ্যাপনা।
এ ব্যাপারে নুর ইসলাম মনার নিকট মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।
আফরোজা বেগমের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ‘এটা ব্যক্তিগত ব্যাপার’ বলে কল লাইনটি কেটে দেন।
আজিজুন নাহারের মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি বোদা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজে নিয়োগপ্রাপ্ত ২০১৩ সালে। ২০১৪ সালে আমাকে রুহিয়া ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ জোর করে কলেজে নিয়ে গেছেন। আমাকে ছাড়া আমার বিষয়টাতে অনার্স খোলা যাচ্ছিল না।
রুহিয়া ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে অফিসিয়াল কোন তথ্য নেই।’
আবুল হোসেন সরকার কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ খোদা বকস ডাবলুর সাথে মোবাইল যোগে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, নুর ইসলাম মনা ডিগ্রী দর্শন বিভাগে আনুমানিক ২০১৫ সালে তৃতীয় পোস্ট এ নিয়োগপ্রাপ্ত। তিনি এমপিও ভুক্ত নন। এমনকি তার এমপিও ভুক্ত হওয়ার সুযোগ খুব কম।
লাহিড়ী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন জানান, ‘আফরোজা নামে আমাদের কলেজে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ডিগ্রি পাস কোর্সে একজন শিক্ষক আছেন। তিনি এনটিআরসিএ কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত তৃতীয় শিক্ষক যার কোন বেতন/ভাতা নেই। তিনি কলেজে নিয়মিত না আসায় করোনার আগে তাকে আমি শোকজ করেছি।’
বোদা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ সাবুল এর সাথে একাধিক বার মুঠোফোনে যোগাযোগ করতে চাইলে তিনি কলটি রিসিভ করেননি।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও রুহিয়া ডিগ্রী কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি এবং আবুল হোসেন সরকার ডিগ্রী কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি আব্দুল্লাহ-আল-মামুন বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। কেউ ২ টি প্রতিষ্ঠানে একসাথে চাকুরী করতে পারবেন না। এমনটা হলে তাদেরকে শোকজ করা হবে।’
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।